ঈদুল আযহা কুরবানী ও হজের ইতিহাস

ঈদুল আযহা কুরবানী:- ঈদুল আযহা মুসলমানদের প্রধান দুটি ধর্মীয় উৎসবের অন্যতম একটি ঈদুল আযহা। এটা ’কুরবানীর ঈদ’বা ’বাকরা ঈদ’ নামে পরিচিত। ঈদ অর্থ উৎসব বা আনন্দ, আর আযহা অর্থ কুরবানী বা উৎসর্গ করা।মহানবী (স) ঈদুল আযহার দিন ঈদের নামাজ পরবর্তী খুতবায় বলেছেন, এ দিনের প্রথম কাজ হলো সালাত আদায় করা, এরপর নহর (কুরবানী) করা। ঈদুল আযহার দিনের প্রধান আমল কুরবানী।
ঈদুল আযহার কুরবানী সময়ঃ
আরবি জ্বিলহজ মাসের ১০ তারিখ ঈদুল আযহা পালন করা হয়।
ঈদের নামাজঃ
ঈদের নামাজ দুই রাকাত। এটি ওয়াজিব নামাজ, যা জামায়াতের সাথে পড়তে হয়।মুসলিমগন এ নামাজ খুলা মাঠে বা মসজিদে আদায় করে থাকেন।ঈদের সূর্য উদয়ের পর থেকে যোহরের ওয়াক্ত আসার আগ পর্যন্ত মধ্যবর্তী সময়ে আদায় করা হয়ে থাকে। ঈদের নামাজ শেষে ইমামের জন্য খুৎবা পড়া সুন্নাত ও মুসল্লিদের জন্য খুৎবা শোনা ওয়াজিব। সবশেষে খুতবার পরে দোয়ার শরিক হতে হয়।

তাকবীরে তাশরীকঃ
জ্বিলহজ মাসের ৯ তারিখ হতে ১৩ তারিখ আসার পর্যন্ত (মোট ২৩ ওয়াক্ত) সকলের উপর ফরয নামাযের পরেই একবার তাকবীরে তাশরীক পাঠ করা ওয়াজিব। পুরুষরা উচ্চস্বরে ও স্ত্রীলোকগন নীরবে পাঠ করে। তাকবীরে তাশরীক হলো-আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ।
ঈদুল আযহার মুল শিক্ষা হলো সম্পদের মোহ, ভোগ-বিলাসের আকর্ষণ, স্ত্রী-সন্তানের ভালবাসা সবকিছুর ঊর্ধ্বে আল্লাহর সন্তুষ্ঠির প্রতি আত্সমপর্ণ।
ঈদুল আযহা কুরবানীঃ
আরবি ‘কুরবানী’ শব্দের অর্থ যার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়। শব্দটি আবার ত্যাগ করা ও উৎসর্গ করা অর্থেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে।কোননা এ ত্যাগের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়।

ঈদুল আযহা কুরবানী কার উপর ওয়াজিবঃ
সেই বালেগ, মুকীম, স্বাধীন মুসলিমের ওপর কুরবানী ওয়াজিব, যিনি ১০ জ্বিলহজ সন্ধা পরযন্ত সময়ের মধ্যে নিসাব পরিমান সম্পদের অধিকারী হবেন। আল্লাহ তা’আলা বলেন, ‘কাজেই তোমরা রবের উদ্দেশ্যে নামাজ পড় এবং কুরবানী কর। (সুরা আল কাউসার, আয়াত: ২)
ঈদুল আযহা কুরবানী ‘র সময়ঃ
জ্বিলহজ মাসের ১০ তারিখ তথা ঈদের নামাজের পর থেকে ১২ জ্বিলহজ পরযন্ত কুরবানী করা যায়।তবে প্রথম দিন কুরবানী করাই উওম।
ঈদুল আযহা কুরবানী’র কুরবানীর পশুঃ
উট, মহিষ, দুম্বা, ছাগল, ও ভেড়া-এই ছয় শ্রেনির পশু দিয়ে কুরবানী করা যায়।

ঈদুল আযহা কুরবানী ‘র গোশত বন্টনঃ
কুরবানীর ক্ষেত্রে নিয়তের বিশুদ্ধতা অপরিহার্য। পবিত্র কুরআনে (সুরা আল হাজ্জ, আয়াত: ৩৬) তিন শ্রেনির লোককে কুরবানীর গোশত খাওয়া বা খাওয়ানোর কথা বলা হয়েছে-কুরবানী দাতা, আত্রীয়-প্রতিবেশী এবং ফকির-মিসকিন।
আল্লাহ তা’ আলার সন্তুষ্ঠি অর্জনের জন্য ইবরাহিম (আ) তার প্রিয় পু্ত্রকে কুরবানী দিতে গিয়ে আত্রত্যাগের যে মহান দৃষ্ঠান্ত ও আদর্শ স্থাপন করেছেন, সেই স্মৃতিকে স্মরণ রেখে মহান আল্লাহর প্রেমের চেতনাকে প্রথর রাখার জন্য মুসলিম উম্মাহ কুরবানী দেয়।এটা একদিকে যেমন আল্লাহর জন্য আত্মা-উৎসর্গের শিক্ষা দেয়, অপরদিকে অন্যর সাথে সামাজিক বন্ধন ও ভ্রাতৃত্ব সৃষ্ঠি করে।
হজের বর্ণনাঃ
হজ ইসলামের পঞ্চম রোকন বা স্তম্ভ। ‘হজ’ শব্দের আভিধানিক অর্থ – সংকল্প করা, কোথাও যাওয়া ইচ্ছা করা। ইসলামী শরীয়াতের পরিভাষা অনুসারে নির্দিষ্ট দিনে মক্কার পবিত্র কা’বা শরীফ প্রদক্ষিণ, আরাফাতের ময়দানে অবস্থান, সাফা ও মারওয়া পাহাড়দ্বয়ের মধ্যবর্তী স্থানে সা’ঈ করা, মিনায় অবস্থান প্রভৃতি কাজ প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) যেভাবে নির্ধারণ করে দিয়েছেন সেভাবে সম্পন্ন করার নাম হজ।

ঈদুল আযহা কুরবানী হজের গুরুত্বঃ
আল্লাহ তা’আলা বলেছেন, ‘মক্কা শরীফ পরযন্ত পৌছাতে সক্ষম প্রত্যেক ব্যক্তির উপর আল্লাহর জন্য হজ আদায় করা ফরয’। (সূরা আল ইমরান, আয়াত:৯৭) শারীরিক ও আর্থিকভাবে সক্ষম প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য জীবনে একবার হজ করা ফরয।
হজের আহকামঃ
- হজের ফরয মোট তিনটি- ইহরাম বাঁধা
- আরাফাতের ময়দানে অবস্থান।
- তাওয়াফে যিয়ারত সম্পন্ন করা।
হজের ওয়াজিব সমূহঃ
- মুজদালিফায় অবস্থান
- সাতবার সাঈ করা
- মিনায় জামারা সমূহে কম্কর নিক্ষেপ
- কুরবানী করা
- মাথার চুল মুন্ডানো
- বিদায়কালীন তাওয়াফ সম্পন্ন।
হজের তালবিয়াঃ
হজ ও ওমরা পালনকারীদের মিকাতে ইহরাম বাঁধার পর হতে তাওয়াফের স্থানে প্রবেশের পূর্ব পরযন্ত তালবিয়া পাঠ করতে হয়।
তালবিয়া হলো-

এই আর্টিকেল বা অন্য যেকোন বিষয়ে আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে তাৎক্ষনিক উত্তর পেতে আমাদের আপডেট খবর ফোরামে ভিজিট করে প্রশ্ন করে তাৎক্ষনিক উত্তর জেনে নিন: http://updatekhobor.com/forum